গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়া উচিৎ এবং এর বিশেষ ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
কলার মোচার ১০ টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খুবই উপকারী একটা সবজি। গ্রাম বাংলা থেকে মুছে যাওয়া একটি খাবারের নাম হলো কলার মোচা। এই খাবারটি দামে কম হলেও স্বাদে অনেক বেশি ভালো। কলার মোচাতে রয়েছে খনিজ পদার্থ ও ভিটামিন যা মানব দেহের জন্য খুবই উপকারী। কলার মোচা খেলে বিভিন্ন ধরনের রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়।
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে
উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
শরীরে প্রোটিনের অভাব দূর করে
শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে
অনেক দিনের আলসার সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা
বাংলাদেশের সব সময় পাওয়া যায় এমন সবজির মধ্যে অন্যতম হলো কলার মোচা। বাংলাদেশের যে কোণ অঞ্চলেই পাওয়া যায় কলা গাছ এবং এর ফলন ও খুব সহজেই হয়ে থাকে। এই কলা গাছের তেমন কোন যত্ন নেওয়া লাগে না। এরা নিজেরা নিজেদের খেয়াল রাখতে পারে। আমরা যারা গ্রামে কিংবা শহরে বসবাস করি তারা সকলেই চিনি কলার মোচা বা কাঁচা কলা। গাছে ঝুলে থাকা কলার কান্দির একবারে শেষের যে ফুলের অংশটুকু থাকে সেটাকেই বলে কলার মোচা।
মোচার নিচের অংশটুকু সুই এর মতো হয়ে থাকে। মোচার বাহিরের অংশ ফুলের মত হলেও ভেতরের অংশ পাট টু পার্ট একটি পরলের দ্বারা আব্রিত থাকে। এটি দেখতে গারো লাল বর্ণের হয়ে থাকে। কলার মোচার একটি ভালো দিক হলো কলার মোচা সারা বছর পাওয়া যায়। কলার মোচা খেতে যেমন সুস্বাদু ঠিক তেমনি এর পুষ্টিগুণ ও অনেক বেশি। তাই আমরা ফলের রানী হিসেবে কলা কি বুঝি।
কলার মোচা তে অনেক রকম পুষ্টি রয়েছে সেগুলো হলো
ভিটামিন “এ”=২৭ আই ইউ
ভিটামিন”সি”= ৪২০মিলিগ্রাম
ফসফরাস=৩২গ্রাম
ক্যালসিয়াম=৫৬ মিলিগ্রাম
আয়রন=৫৬.৪ মিলিগ্রাম
পটাশিয়াম=৫৫৩.৩ মিলিগ্রাম
ফাইবার=৫.৭গ্রাম
প্রোটিন=৪২ গ্রাম
কার্বোহাইড্রেট=৯.৯ গ্রাম
লোহ=০.২ গ্রাম
কপার=১৩ মিলিগ্রাম
আঁশ=৪২০ গ্রাম
ইত্যাদি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ কলার মোচাই।
গর্ভবতী মায়ের শরীরের জন্য খুবই প্রয়োজনীয় একটি খাবার হচ্ছে কলার মোচা এতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ থাকে এছাড়াও পর্যাপ্ত পরিমাণ আইরন এবং ভিটামিন থাকে। গর্ভাবস্থায় বেশি বেশি কলার মোচা খেলে গর্ভবতী মায়ের শারীরিক রোগ বালাই দূর করে এবং বাচ্চার মস্তিষ্ক বিকাশের সহায়তা করে।
গর্ভবতী নারীদের জন্য কলার মোচা
কলার মোচা খেতে আমরা কে না ভালোবাসি। কলার মোচা বিভিন্নভাবে খাওয়া যায়। বিভিন্ন এলাকার মানুষ বিভিন্নভাবে এই মোচা দিয়ে রান্না করে খাই যেমন কেউ ভাজি করে আবার কেউবা তরকারি রান্না করে আবার কেউ বা ভর্তা করে খায়। এই কলার মোচাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন যা আমাদের শরীরের বিভিন্ন রোগ থেকে মুক্তি দেয় এবং শরীরের ফুল স্পিড বাড়িয়ে দেয়।
আসুন আমরা নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করি। গর্ভকালীন সময়ে কলার মোচা খাওয়া অত্যন্ত ভালো কারণ কলার মোচাতে রয়েছে ভিটামিন বি৬, ভিটামিন সি, পটাশিয়াম, ক্যালসিয়াম, ফসফরাস, ফাইবার, ইত্যাদি। যা আমাদের শরীরের শুধু উপকার করে না আমাদের তত্ত্বেও বিভিন্ন সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে।
হার্ড ভালো রাখতে সাহায্য করে এবং এর কার্যক্ষমতা বৃদ্ধি করে শরীরের বিভিন্ন রোগ বালায় দূর করে। তাই আমাদের কলার মোচা নিয়মিত হওয়া উচিত। আমরা কলার মোচাকে বিভিন্নভাবে খেতে পারি এইটা জুস বানিয়ে খেতে পারি এতে পরিপূর্ণ ভিটামিন লাভ করা যায়। অনেকেই মনে করতে পারে যে গর্ভকালীন অবস্থায় কলার মোচা খেলে বাচ্চা কোন সমস্যা হবে কিন্তু না কলার মোচা খেলে বাচ্চার মেধা বিকাশ হয় এবং এ থেকে ক্যালসিয়াম ঘারতি পূরণ হয়।
গর্ভকালীন সময়ে মায়েরা অনেক দুর্বল হয়ে যায় তখন গর্ভকালীন মায়েদের রক্তশূন্যতা ক্যালসিয়ামের ঘাটতি আয়রনের ঘাটতি আরো নানান জটিল সমস্যা দেখা দেয়। এই কলার মোচা আপনাদের এই ধরনের ঘাটতি থেকে রক্ষা করবে তাই আসুন আমরা নিয়মিত কলার মোচা খাই। কলার মোচা খাওয়ার ফলে তোকে ধীরে ধীরে বয়সের ছাপ দূর হয়ে যায়।
কোন কোন কলার মোচা খেতে ভালো লাগে
বেশিরভাগ মানুষই কলার মোচা পছন্দ করে। যারা একবার কলার মোচার ভাজি বা তরকারি খেয়ে থাকে তারা বারবার খেতে চাই। কলার মোচা বিভিন্ন ধরনের হয়ে থাকে। যেমন বিচি কলা, সাগর কলা, মানিক কলা, চাম্পা কলা, তরকারি কলা, ইত্যাদি। এদের মধ্যে বিচি কলার থোর বা মোচা সবচেয়ে বেশি খেতে ভালো।
তবে প্রত্যেকটা কলারই মোচা খাওয়া যায় কিন্তু কিছু কিছু কলার মোচা খেতে অনেক তিতা লাগে এবং কষ্টা লাগে যেটা খেতে একদমই ভালো না। এদের মধ্যে তরকারি কলার মোচা খেতে ভালো লাগে না এইটা তিতা তিতা লাগে এবং কষ্টা লাগে। আশা করি আপনাদের আমি বুঝাতে পেরেছি।
গর্ভাবস্থায় কলার মোচার ঔষধি গুনাগুন
গর্ভাবস্থায় কলার মোচা খাওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। কলার মোচাতে এমন কিছু ঔষধি গুন রয়েছে যা শরীরকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। কলার মোচা ক্যান্সার রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রাখে। কারণ এতে ক্যালসিয়াম ও ফসফরাস থাকায় এটি বাচ্চাদের জন্য অনেক উপকারী একটি সবজি এতে অনেক বেশি ফসফরাস থাকার কারণে ব্লাড প্রেসার কমে। কলার মোচাতে রক্তস্বল্পতা দূর করে আয়নের ঘাটতি পূরণ করে। কলার মোচা সিদ্ধ করে এটি পাটাই বেটে মেয়েদেরকে খাওয়ালে মেয়েদের বিভিন্ন রকম গোপনীয় সমস্যাই ঔষধ হিসেবে কাজ করবে।
গর্ভাবস্থায় কলার মোচার ১০টি স্বাস্থ্য উপকারিতা
চলুন তাহলে যাওয়া যাক গর্ভাবস্থায় গর্ভাবস্থায় কলার মোচার 10 টি স্বাস্থ্য উপকারিতা এক নজরে দেখিনি
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করে
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করে
উচ্চ ফাইবার সমৃদ্ধ
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করে
শরীরে প্রোটিনের অভাব দূর করে
শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে
অনেক দিনের আলসার সমস্যা দূর করে
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করে
ভিটামিনের ঘাটতি পূরণ করেঃ গর্ভবতী মেয়েদের জন্য কলার মোচা একটি উন্নত মানের সবজি। কলার মোচা শুধু ভিটামিন এ এবং ভিটামিন সি এছাড়াও আরো অনেক ভিটামিন ও খনিজের অভাব পূরণ করে। তাই গর্ভকালীন সময় নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া উচিত।
মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করেঃ আপনি আপনার সন্তানকে ভালোভাবে স্তন্যপান করাবেন তা খুব সাবধানতার সঙ্গে করতে হবে এটা একজন মা হিসেবে জানা খুব প্রয়োজন। কলার মোচা কলার মোচা মায়ের বুকের দুধ বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে। বিভিন্ন ডাক্তারদের পরামর্শ থাকে যে কলার মোচা খাওয়ার জন্য।
উচ্চফাইবার সমৃদ্ধঃ গর্ভবতী মহিলাদের কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে কলার মোচা একটি সাধারণ সমাধান। এই কলার মোচাতে ফাইবার থাকার ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা দূর করে এবং হজম শক্তি করতে সাহায্য করে।
ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করেঃ গর্ভাবস্থায় মেয়েদের রক্তে শর্করার পরিমাণ বেশি থাকে। অধিকাংশ মেয়েদের মধ্যে এই সমস্যা লক্ষ্য করা যায়। তাই গর্ভাবস্থায় ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণ করার জন্য কলার মোচা নিয়মিত খাওয়া উচিত।
শরীরে প্রোটিনের অভাব দূর করেঃ আপনার শরীরকে কি প্রোটিনের ঘাটতি থেকে রক্ষা করতে চান চুল পড়া বন্ধ করতে চান এছাড়াও গর্ভকালীন অবস্থায় চুল পড়ার সমস্যাটা দুই থেকে তিনগুণ বেড়ে যায় তাই আমাদের এই অবস্থাতে প্রোটিন সমৃদ্ধ খাদ্য খেতে হবে বেশি বেশি আর এই প্রোটিনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আপনাদের প্রচুর পরিমাণে কলার মোচায় হওয়া উচিত.
শরীরের রক্তশূন্যতা দূর করে: আমরা সবাই জানি রক্তশূন্যতা দেখা দিলে হিমোগ্লোবিন কমে যায় আর এই রক্তশূন্যতা দূর করার জন্য কলার মোচা অসাধারণ কাজ করে. গর্ভবতী মেয়েদের জন্য রক্তস্বল্পতা একটি বড় সমস্যা তাই আপনারা গর্ভকালীন অবস্থায় কলার মোচা বেশি বেশি খাবেন এবং হিমোগ্লোবিনের ঘাটতি পূরণ করবেন।
অনেক দিনের আলসার সমস্যা দূর করেঃ আপনারা সবাই জানলে অবাক হবেন যে কলার মোচাই যে পরিমাণ পুষ্টিগুণ ও ভিটামিন রয়েছে তাতে অনেক দিনের আলসার সমস্যা হয়ে থাকলেও তা নিমিষেই দূর হয়ে যাবে। আমরা কলার মোচা খেতে অনেক ভালোবাসি তবে গর্ভবতী মেয়েরা মনে করে যে কলার মত খেলে গর্ভের সন্তানের কোন সমস্যা হবে কি না। না কোন সমস্যা হবে না এতে আরো বাচ্চার মেধা বিকাশ হবে এবং বাচ্চাকে অতি শক্তিশালী করে তৈরি করবে।আলসার কিন্তুএকটি জটিল অসুখ তাই আমরা চাই নিয়মিত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করুন এবং দীর্ঘদিনের আলসার সমস্যা থেকে থাকে মুক্তি পান।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করেঃ আমাদের অনেকের শরীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক কম থাকায় আমাদের শরীরে যেকোনো অসুখ খুব সহজেই বাসা বাঁধতে পারে। তাই আমাদের প্রতিনিয়ত কলার মোচা খাওয়ার অভ্যাস করা দরকার। এই কলার মোচাতে রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন সি যা আপনার শরীকে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে সাহায্য করে । গর্ভকালীন সময়ে অনেক কষ্টকর একটি সময়। যে সময়ে শারীরিক বিভিন্ন ধরনের সমস্যা প্রতিনিয়ত লেগেই থাকে। তাই আমাদের বেছে বেছে যেসব খাবারে পুষ্টিগুণ ভরপুর থাকে সেসব খাবার খাওয়া উচিত।
ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণঃ কলার মোচাতে প্রচুর পরিমাণ ক্যালসিয়াম রয়েছে। এতে শিশু বিকাশে সহায়তা করে এছাড়াও দৃষ্টিশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে এবং ত্বকের যত্নে এটি খুব উপকারী তাই কলার মোচা নিয়মিত খাদ্য তালিকায় রাখা উচিত।
আয়রনের ঘাটতি পূরণ করেঃ কলার মোচায় প্রচুর পরিমাণ আয়রন রয়েছে। গর্ভাবস্থায় একটি মায়ের জন্য আয়রনের খুব প্রয়োজন। কারণ গর্ভাবস্থায় একটি মায়ের জন্য আয়রনের ঘাটতি দেখা দেয় ক্যালসিয়ামের ঘাটতি দেখা যায় এবং রক্তস্বল্পতাও দেখা দেয়। আর এই তিনটি সমস্যা দূর করার জন্য আমাদের নিয়মিত কলার মোচা খাওয়া প্রয়োজন।
কলার মোচা খাওয়ার অপকারিতা
এতক্ষণ আমরা উপকার সম্পর্কে জানলাম এবার আমাদের অপকার সম্পর্কেও তো জানতে হবে। তাই আসুন আমরা ক্ষতিকর দিকগুলো সম্পর্কে আলোচনা করি।
কলার মোচা তে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার এবং প্রোটিন থাকায় কলার মোচা অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকা উচিত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা আছে অতিরিক্ত কলার মোচা খেলে এই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেশি হতে পারে এবং গ্যাস্ট্রিক সমস্যাও দেখা যেতে পারে।
যাদের অ্যালার্জি জনিত সমস্যা রয়েছে তাদের অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কলার মোচা খাওয়া উচিত। কেননা কলার মোচাতে ফেনোলিক এসিড থাকায় এলার্জি জনিত সমস্যা গুলো বেশি হতে পারে।
গর্ভাবস্থায় অবশ্যই যে কোন খাবার মাপ যোগ করে খাওয়া উচিত তেমনি কলার মোচাও তাই অতিরিক্ত খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন এতে মা বাচ্চা দুজনেই সুস্থ থাকবে। পরিমাণ মতো খেতে হবে।
অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।
comment url